Sunday, August 17, 2014

Those who are going for Hajj

হজ বিশুদ্ধ হওয়ার শর্তসমূহ

হজের আভিধানিক অর্থ হলো মক্কা শরিফের ইচ্ছা করা 

শরিয়তে এর অর্থ নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট স্থানের জিয়ারত করা (আততা'রিফাত : /২৬)
হজ ফরজ হওয়ার ব্যাপারে পুরো উম্মত একমত  ব্যাপারে কারো দ্বিমত নেই এর ফজিলত বিষয়ে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন : 'আর  ঘরের হজ করা হলো মানুষের ওপর আল্লাহর প্রাপ্যযে লোকের সামর্থ্য রয়েছে  পর্যন্ত পেঁৗছার আর যে লোক তা মানে নাআল্লাহ সারা বিশ্বের কোনো কিছুরই পরোয়া করেন না' (আলে ইমরান : ৯৭)

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন : 'যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য হজ আদায় করে এবং সেখানে যাবতীয় মন্দ কাজ  কথা থেকে বিরত থাকেসে সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানের মতো গুনাহমুক্ত হয়ে ফিরবে' (বুখারি : ১৪২৪)


হজের শর্ত : নিম্নোলি্লখিত শর্তগুলো পাওয়া গেলে প্রত্যেক নর-নারীর ওপর জীবনে একবার হজ করা ফরজমুসলমান হওয়া অমুসলিমের ওপর হজ ফরজ নয় (বুখারি : ৩৫৬)
বালেগ হওয়া নাবালেগের ওপর হজ ফরজ নয় (বুখারি : ১৬/৩১৫বায়হাকি : ১০১৩৩)
বোধসম্পন্ন হওয়া নির্বোধ পাগলের ওপর হজ ফরজ নয় (বুখারি : ১৬/৩১৫)
আজাদ বা স্বাধীন হওয়া গোলামের ওপর হজ ফরজ নয় (আলে ইমরান : ৯৭বায়হাকি : ১০১৩৩)
সামর্থ্যবান হওয়া সামর্থ্যবান হওয়ার অর্থ হলোনিজের অনুপস্থিতিতে পরিবারের যাবতীয় ব্যয় নির্বাহের ব্যবস্থা এবং যাতায়াত  পাথেয়র মালিক হওয়া (তিরমিজি : ৭৪১

যদি নিজ খরচে যাওয়ার মতো মাহরাম না থাকে তাহলে নারীদের ক্ষেত্রে নিজের এবং একজন মাহরামের হজে যাওয়া-আসা  থাকা-খাওয়ার যাবতীয় খরচ বহনে সামর্থ্যবান হতে হবেহজের সময়ের আগমন

হজ আদায় ওয়াজিব হওয়ার শর্ত : কোনো ব্যক্তির ওপর হজ ফরজ হওয়ার পর নিজে হজ আদায় করা ওয়াজিব হওয়ার জন্য যেসব শর্ত রয়েছে তা পাওয়া না গেলে নিজে হজ করা ওয়াজিব হবে না বরং অন্য কোনো ব্যক্তি দ্বারা তৎক্ষণাৎ বদলি হজ করাতে হবে অথবা বদলি হজ করানোর জন্য অসিয়ত করতে হবে আর নিজে হজ আদায় করা ওয়াজিব হওয়ার জন্য শর্ত হলো :

শারীরিকভাবে হজ করতে সক্ষম হওয়া (বায়হাকি : ৮৯২২)
হজে গমনে প্রতিবন্ধকতা না থাকা যেমন-কয়েদি বা পরাধীন ব্যক্তি (বায়হাকি : ৮৯২২)
রাস্তার নিরাপত্তা থাকা (সুনানে কুবরা : ৮৯২২)
নারী যুবতী হোক বা বৃদ্ধাতার সঙ্গে স্বামী বা অন্য কোনো মাহরাম থাকা (বুখারি : ১০২৪দারা কুতনি : ২৪৬৭)
মহিলা তালাক বা স্বামীর মৃত্যুর কারণে ইদ্দত অবস্থায় না হওয়া (সুরা তালাক : )
হজ বিশুদ্ধ হওয়ার শর্ত : নিম্নোলি্লখিত শর্তগুলো পাওয়া না গেলে হজ আদায় শুদ্ধ হবে না

ইহরাম তথা হজের নিয়ত করা সুতরাং ইহরাম বাঁধা ছাড়া হজ আদায় সহিহ হবে না (বুখারি : )
ইহরামের নিয়ম হলোমিকাত থেকে তালবিয়া পড়ার মাধ্যমে হজের নিয়ত করা পুরুষরা ইহরামের সময় সেলাই করা কাপড় খুলে সেলাইবিহীন কাপড় পরিধান করবে (বুখারি : ১৭০৭)


নারীরা স্বাভাবিক কাপড় পরবে তবে নেকাব বা অন্য কোনো কাপড় চেহারার সঙ্গে লেগে থাকতে পারবে না

তালবিয়া এভাবে পড়বে : 'লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকলাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইকইন্নাল হামদাওয়ানি্ন'মাতা লাকা ওয়াল মুলকলা শারিকা লাক' (বুখারি : ১৪৪৮)


সময় সুতরাং হজের নির্দিষ্ট সময়ের আগে বা পরে হজ আদায় সহিহ হবে না (বাকারাহ : ১৯৭)
নির্দিষ্ট স্থান অর্থাৎ আরাফার ময়দানে অবস্থান করাতাওয়াফে জিয়ারত বায়তুল্লাহ শরিফে করারমি মিনাতে করা এবং পশু কোরবানি হারাম শরিফে করা যদি সময়মতো আরাফায় অবস্থান করা না হয় তাহলে হজ সহিহ হবে না (নাসাঈ : ২৯৬৬সুরা হজ : ২৯)



যারা হজ্বে যাচ্ছেন-

হজ্বে যাচ্ছেন, আল্লাহ তাআলার নিকট প্রার্থনা করুন, ‘হে আল্লাহ! আমার হজ্বকে সহজ করো, কবুল করো’ - দেখবেন, আপনার সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। হজ্বের দীর্ঘ সফরে ধৈর্য হারাবেন না। সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মানসিকতা রাখবেন, কোন অবস্থাতেই বিচলিত হবেন না। হজ্বের প্রস্তুতিপর্বে- আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট তৈরি করা, প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করা, ম্যানিনজাইটিস টিকা বা অন্যান টিকা বা ভ্যাকসিন দেওয়া (অনেকে দালালের মাধ্যমে ১০০ বা ২০০ টাকায় টিকা দেয়ার সনদ সংগ্রহ করেন, এটা কখনোই করবেন না) - হজ্বের এই সব নিয়ম জানার জন্য একাধিক বই পড়তে পারেন কিংবা যাঁরা পূর্বে হজ্ব পালন করেছেন তাঁদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করুন। হজ্বের কোনো বিসয়ে ভিন্নতা দেখলে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত না হয়ে আপনি যে আলেমের ইল্ম ও তকওয়ার ওপর আস্থা রাখেন তাঁর সমাধান অনুযায়ী আমল করবেন, তবে সে অনুসারে আমল করার জন্য অন্য কাউকে বধ্য করবেন না।

আর অবশ্যই যাত্রার শুরুতেই নিজেকে এমনভাবে তৈরি করে নিন-
  • যেন দেহ-মনে কোন কষ্ট না থাকে। 
  • ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে হজ্ব হলো দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত এবং শ্রমসাধ্য ব্যপার। 
  • আপনার মালপত্র হলকা রাখুন, কারন আপনার মালমাল আপনাকেই বহন করতে হবে। 
  • আপনার সঙ্গীদের সম্মান করুন এবং তাঁদের ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। 
  • দলের দূর্বল বয়স্কদের প্রতি খেয়াল রাখবেন।
  • সৌদী আরবে গিয়ে বিভিন্ন ওয়াক্তের নামাজ হারাম শরীফে জামাতে আদায় করার চেষ্টা করবেন।
  • যাত্রার শুরুতেই একজন ভালো সফর সঙ্গী খুঁজে নেবেন, যাতে নামাজ আদায় বা ভ্রমনের বিভিন্ন পর্র্যায়ে একে অন্যেও সহায়তা নিতে পারেন।

এছাড়াও ভাষার প্রতিবন্ধকতা, অচেনা রাস্তাঘাট, ভীড় আর বিরামহীন ব্যস্ততা সত্বেও বরাবরের মতো প্রতি বছরই সৌদী আরব সরকার এবং বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে হাজীদের সুবিধার্থে নানা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়ে থাকে। 

Entry of Mecca Saudi Arabia


মনে রাখবেন-

  • উড্ডয়নের সময় অনুযায়ী অবশ্যই বিমান বন্দরে পৌছাতে হবে।
  • আপনার নাম ঠিকানা লেখা ব্যাগ বা সুটকেসে কোন পচনশীল খাবার বা দ্রব্য রাখবেন না।
  • বিমান বন্দরে আপনার যে সমস্ত মালামাল দিয়েছেন তা ভালোভাবে বাঁধা হয়েছে কি না দেখে নেবেন।
  • বিমান বন্দরে আপনার মালামালের কোন টোকেন দিলে তা অবশ্যই সংরক্ষন করবেন (কারন জেদ্দা বিমান বন্দরে ঐ টেকেন দেখিয়ে আপনার মালামাল ফেরত নিতে হবে)।
  • ইমিগ্রেশন ও চেকিং এর পর নিজ নিজ মালপত্র নিজ দায়িত্বে রাখুন।
  • বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত পরিচয়পত্র, পিলগ্রিম পাস, বিমানের টিকেট, টিকার কার্ড, অন্যান্য কাগজপত্র, বিমানে পড়ার জন্য ধর্মীয় বই ইত্যাদি গলায় ঝোলানো ব্যাগে রাখুন।
  • সর্বোপরি যথা সময়ে বিমানে উঠে নির্ধারিত আসনে বসুন।

No comments:

Post a Comment